
রাশিদুল ইসলাম,(নাটোর) প্রতিনিধিঃ
নাটোরের গুরুদাসপুরে ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত না হলেও নৌকার মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রার্থীরা। ইতিমধ্যে স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে ধরনা দিতে শুরু করেছেন প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে অন্তত ২৫জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নৌকা প্রতীক পাওয়ার আশায় দলের উপর মহলেও চেষ্টা তদবির চালাচ্ছেন।
উপজেলার ১নং নাজিরপুর ইউনিয়নকে মাদক,ঘুষ,সন্ত্রাস,ও দূর্নীতিমূক্ত ইউনিয়ন গড়তে চমক দেখাতে মাঠে নেমেছেন বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য আলহাজ্ব মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা। তিনি মনে করেন বিগত দিনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা মানুষের আশা আখাংকা পূরনে ব্যর্থ হয়েছেন। জনগণ এখন নতুনত্ব চায়। দলীয় মনোনয়ন পেলে ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে বিজয় লাভ করবেন বলে তিনি জানান।
রাজনৈতিক পরিচয়ঃ
জন্মসূত্রে আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান।পিতা মরহুম আলহাজ্ব করিম বক্স মোল্লা ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নাজিরপুর ইউনিয়নের স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতিসহ মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।ছিলেন তিনি।১৯৭২ হতে ১৯৭৭ পর্যন্ত নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।১৯৭৭ হতে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত গুরুদাসপুর থানা আওয়ামীলীগের এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। সাখাওয়াত হোসেন মোল্লার সহোদর বড়ভাই মরহুম সুলতান আহম্মেদ ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং তাহার ছেলে সাইফুল ইসলাম মোল্লা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এবং পরবর্তীতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জাতীয় নির্বাচন ও আন্দোলনে ভূমিকাঃ
তিনি ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে শৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।১৯৮৬ সালের জাতীয় নির্বাচন,১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন,১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারীর আন্দোলন ও জাতীয় নির্বাচন, ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের এর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচন,২০১৩ সালের জাতীয় নির্বাচন,২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে নাজিরপুর ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর পক্ষে নাটোর -৪ আসনের সাংসদ,ও নাটোর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপির সাথে থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।২০০২ সালের ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের অনুষ্ঠানে বি.এন.পি, জামাত, শিবির ক্যাডাররা বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ দলীয়, জাতীয় পতাকা, শোক পতাকা পুড়িয়ে দিতে গেলে তিনি বাধা দেওয়ায় শারীরিকভাবে হেনস্তা এবং লাঞ্চিত হোন।নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস এমপির নেতৃত্বে ২০০৪ সালে একুশে আগষ্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ মিছিলে সিংড়া উপজেলা চত্বরে তৎকালীন বি.এন.পি,জামাতের কর্মীদের হামলায় সাংসদ আব্দুল কুদ্দুস গুরুত্বর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।তাহাকে হামলাকারীদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে গিয়ে তিনিও গুরুত্বর আহত হন।এছাড়া তাহার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও জন্মগত ভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছেন।
সমাজ সেবা মূলক কাজঃ
বর্তমানে গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন।
২০১২ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া বেড়গঙ্গারামপুর জামে মসজিদ কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন।
বেড়গঙ্গারামপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আলহাজ্ব সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আওয়ামীলীগের প্রতি অগাধ বিশ্বাস, ভালোবাসা ও আস্থা তৈরী হয়েছে তার। স্কুল জীবনে ছাত্র রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। সাখাওয়াত হোসেন এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
করোনাকালীন সময়ে অসহায়,ক্ষুধার্ত মানুষের পাশে থেকে আর্থিক ভাবে সহযোগীতা করে এলাকার বহু মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন। বর্তমানেও অসহায়,নির্যাতিত,অবহেলিত মানুষদের পাশে অবস্থান নেয়ার প্রাণপন চেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছেন।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা ইতিমধ্যে নানান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। তিনি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দোয়া ও সমর্থন প্রার্থনা করছেন।
এলাকাবাসী জানান, সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ।তিনি সৎ, ন্যায়-পরায়ন ও জনবান্ধব প্রকৃতির মানুষ। মানুষের বিপদে আপদে তার সহযোগিতার ভূমিকা অপরিসীম। আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা পদপ্রার্থী’র চেয়ারম্যান হিসেবে আলহাজ্ব মো. সাখাওয়াত হোসেন মোল্লাকে দেখতে চাই।
সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা বলেন, জীবনে কখনো দুর্নীতি-অন্যায়ের সাথে আপস করিনি। মানুষকে সেবা করার মানসিকতা নিয়ে ছোটবেলা থেকেই কাজ করে আসছি। নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেতে আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মনোনয়ন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সকলের দোয়া ও ভালোবাসায় জননেত্রী শেখ হাসিনা ও দলের নেতাকর্মীরা আমাকে মূল্যায়ন করবেন এবং দল যদি আমাকে দলীয় মননোয়ন দেন তাহলে নির্বাচিত হয়ে নাজিরপুর ইউনিয়নকে ঘুষ,দুর্নীতি,মাদক, সন্ত্রাস,বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, নারী নির্যাতন রোধে কাজ করব।নাজিরপুরকে একটি মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করব। ভোটারদের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখে তিনি জানান, সকলেই আমাকে ভোট দিয়ে এলাকার উন্নয়ন মূলক কাজ করার সুযোগ দিবেন। আমার কোনো লোভ-লালসা নেই, মানুষের সেবা করাই আমার মূল লক্ষ্য।