
রাশিদুল ইসলাম,(নাটোর) প্রতিনিধিঃ
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট মো. মুকুল হোসেন এখন প্রাইভেট চেম্বারের চিকিৎসক।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করার পর থেকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে এলাকাবাসী। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সরকারি হাসপাতালে ফার্মেসি বিভাগে চাকরি করার সুবাদে মুকুল হোসেন সরকারী স্টোর থেকে বিভিন্ন ধরনের উন্নতমানের ওষুধ জনগণের মাঝে ফ্রি বিতরণ করার কথা থাকলেও তার প্রাইভেট চেম্বারের রোগীদের মাঝে বিক্রি করে থাকেন। তিনি রেজিস্টার্ড ডাক্তার না হয়েও নাজিরপুর বাজারে মাবশুরাহ্ এইড নামে ব্যক্তিগত চেম্বার খুলে অর্থের বিনিময়ে রোগী দেখেন। নিজের চেম্বারে কাটা সেলাইসহ ছোটখাটো অপারেশনও করেন দেদারছে। তিনি প্রেসক্রিপশনও দেন নিয়মিত।
শুধু তাই নয়, এলাকার বেকার ছেলেদের স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মুকুল হোসেনের বিরুদ্ধে। পরে চাকরি দিতে না পারায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান উজ্জল তাকে চাপ সৃষ্টি করেন। কিস্তির মাধ্যমে টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও অনেকেই সেই টাকা এখনো ফেরত পাননি বলে জানা গেছে। গুরুদাসপুরের গোপিনাথপুর গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মুকুল হোসেন ডাক্তার না হয়েও নাজিরপুর বাজারে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে চেম্বার খুলেছেন।
তার ভুল চিকিৎসায় অনেক রোগী শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থরা মুকুলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, সপ্তাহে ছয়দিন সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে মুকুল হোসেনের দায়িত্ব থাকলেও বেশির ভাগ দিন তিনি সেখানে ডিউটি করেন না। গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামের সহযোগিতায় এসব অপকর্ম করছেন বলে এলাকাবাসী দাবি করেন। এলাকাবাসী অনেকবার মুকুল হোসেনের এসব অপকর্মের ঘটনা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাননি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন ও সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ করেন, মারামারির জখমপ্রাপ্ত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হলে ৩২৬ ধারার সার্টিফিকেট নিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদের নিকট থেকে অনেক টাকা উৎকোচ নেন মুকুল হোসেন। কিন্তু তাদের কোন সার্টিফিকেট দেননি। এসব ব্যাপারে অভিযুক্ত মকুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে অভিযোগের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছি। ডাক্তার না হলেও মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে কোন বাধা নেই।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেছেন, মকুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।