হবিগঞ্জের লাখাই ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ৬ জন আসামী ৪৮ ঘন্টায় গ্রেফতার

মীর দুলাল, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের লাখাইয়ের ধর্ষন মামলার অগ্রগতি নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী! হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার হাওরে নববধুকে ধর্ষণ মামলার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ৮জন আসামীর মধ্যে ৬জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৩জনকে আটক করে এবং বাকী ৩জনকে প্রযুক্তির সহায়তায় রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার পাহাড়ের পাদদেশ থেকে আটক করা হয়! গ্রেফতারকৃত আসামী ইতিমধ্যে তাদের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্ধি প্রদান করেন। সোমবার( ৬ সেপ্টেম্বর) ২১ ইং বলি আড়াইটায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী এতথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ২৫ আগস্টে লাখাই উপজেলার মোড়াকরি গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ রাকিব আহমদ তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ও বন্ধু রকিব মিয়া কে নিয়ে লাখাই উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের পশ্চিমে টিক্কাপাড়া হাওড়া নৌকা ভ্রমণের উদ্দেশ্য বের হন। দুপুর সাড়ে ১২ ঘটিকার সময় আসামি মুসা মিয়া এবং সাব্বিরসহ অন্যান্য আসামীগণ আরেকটি নৌকা নিয়ে তাদের নৌকা গতিরোধ করে এবং লাঠি নিয়ে নৌকায় উঠে তাদেরকে মারধর করে আসামি মুসা মিয়া। লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে রাকিব আহমেদ এবং তার বন্ধু ও নৌকার মাঝিকে মারধর করে বেঁধে রাখে। পরবর্তীতে আসামিরা হাওড়ার সুইচগেট নিয়ে নববধুকে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে,! ধর্ষনের সময় তারা পড়নের কাপড় খুলে ভিকটিমের পাশে ভিকটিমের নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারন করে এবং রাকিব আহমেদ এর কাছে বলে যে ৯লক্ষ টাকা দিতে হবে নতুবা হত্যা করে লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে বাদী এবং বাদীর বন্ধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এদিকে ধর্ষিতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার এর মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে ৮জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন রাকিব আহমদ। পুলিশ সুপার আরো বলেন, মামলা দায়ের পর পরই আমি নিজেকে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেলের মাহফুজা আক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাদী এবং ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে লাখাই থানার অফিসার ইনচার্জকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করি। অফিসার ইনচার্জ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি নাঈমুর রহমান শুভকে গ্রেফতার করেন এবং অপর ২ জন আসামিকে র‌্যাব আটক করে। এদিকে পুলিশের নিরবিচ্ছিন্ন অভিযানের ফলে অন্যান্য আসামিরা পার্বত্য জেলা আত্মগোপন করে। পুলিশের প্রযুক্তিগত তদন্তের মাধ্যমে তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে পাতা মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২২), বকুল মিয়ার ছেলে সুজাত মিয়া(২৩) এবং নিজাম মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (২৫) কে রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার ইসলামপুর বউ বাজার এলাকার পাহাড়ের পাদদেশ হতে আটক করা হয়। এনিয়ে মামলা দায়েরের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ৬জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। এবং এই বিষয়ে মামলার আনুষঙ্গিক তদন্ত কাজ দ্রুত সমাপ্ত করে বিজ্ঞ আদালতে পুলিশ!