
হামিদুল হক মন্ডল, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে সরকারি ৫ হাজার ৮’শ ২৩ মেট্রিকটন সরকারি চাল জালিয়াতির মাধ্যমে উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দায়েরকৃত মামলায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা,উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, ১৬ জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলরদের আসামী করা হয়েছে। গত ২৬ আগস্ট রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. হোসাইন শরীফ বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। ৩১ আগস্ট দুদকের সদর দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মামলার অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়, আসামীরা পারস্পরিক যোগসাজসের মাধ্যমে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জেলার গোবিন্দগঞ্জের উপজেলায় জিআরের বরাদ্দকৃত (ধর্মীয় সভার অনুকূলে) ৫ হাজার ৮ শত ২৩ মেট্রিকটন সরকারি চাল জালিয়াতির মাধ্যমে উত্তোলন করেন। পরে তা কালোবাজারে বিক্রি করেন। এ চালের মূল্যমান হিসাবে সরকারি ২২ কোটি ৩ লাখ ২১ হাজার ৫৯০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের দণ্ডবিধির ৪০৯/৪৬৭/ ৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, কামদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাহেদ হোসেন চৌধুরী,কাটাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম (রফিক), শাখাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহাজুল ইসলাম,রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ সরকার, সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাকিল আলম,দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. র. ম. শরিফুল ইসলাম জজ, তালুককানুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিক,নাকাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান,উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আকতারা বেগম,রাখালবুরুজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহদাত হোসেন, ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মোল্লা,গুমানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরীফ মোস্তফা জগলুল রশিদ রিপন, কামারদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রতন,কোচাশহর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন,শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মন্ডল, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান,শালমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আমির হোসেন শামীম ও গোবিন্দগঞ্জ কাউন্সিলর গোলাপী বেগম। এবিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এর আগে তদন্ত হয়েছে এখন ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারলাম মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে কাগজপ্ত্রাদি দেখে জানা যাবে। কি পরিমান বরাদ্দ ছিল। মামলাটি আরো অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত করার জন্য বিজ্ঞ আদালত, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যমকর্মীদের সুদৃর্ষ্টি কামনা করছি। উল্লেখ্য,গত ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন। তিনি ২০১০ সালের বিসিএস এ উর্ত্তীণ হন। বিগত ৬ বছর হলো তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে গোবিন্দগঞ্জে উপজেলায় ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। তাহার দায়িত্বে থাকা কালিন সময়ে উপজেলার টি আর, কাবিখা, কাবিটা ও দূর্যোগ সহনশীল ঘর নির্মাণ,আশ্রয়ণ প্রকল্প গুলোতে দৃশ্যমান অনিয়ম দূর্নীতি করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিৎ বলে মনে করেন গোবিন্দগঞ্জের সচেতন নাগরিক সমাজ।