
ইলিয়াস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মাচান পদ্ধতিতে এই প্রথম চাষ হচ্ছে, রঙ বেরঙের তরমুজ গাছে গাছে দুলছে। বাহারি রঙের এ তরমুজ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
অসময়ে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বিষমুক্ত বারোমাসি রঙিন তরমুজ আবাদ করে সুদিন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগে অধ্যায়নরত ৪র্থ বর্ষের ছাত্র শাহিন আলম (২২)।
করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অবসর সময় পার করছিলেন। একদিন ইউটিউবে মাচান পদ্ধতিতে তরমুজ চাষের পদ্ধতি দেখেই নিজ থেকে বারোমাসি তরমুজ চাষে উৎসাহী হন। এরপর অনাবাদি ২৫ শতাংশ জমি ১০ হাজার টাকায় বর্গা নেয় শাহিন ও মানিক ৷ শুরু হয় মাচান পদ্ধতিতে তরমুজ চাষের কার্যক্রম ।
অসময়ে মাচান পদ্ধতিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ করে সাফল্য এসেছে তাদের।
স্থানীয়রা জানান, কৃষক পরিবারের ছেলে শাহিন । তবে নিজে কখনো চাষাবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। এবারই প্রথম তরমুজ চাষ করেছেন তা-ও আবার মাচান পদ্ধতিতে। এবং সফলও হয়েছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহিন আলম জানান-বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে বাড়িতে চলে আসি। অনেকটা অবসর সময় কাটছিল। হঠাৎ একদিন ইউটিউবে দেখতে পাই, মাচান পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন সময়ে তরমুজ চাষ করা যায়। বাড়ির পাশের একজনের অনাবাদি জমি বর্গা নিয়ে তরমুজ চাষ শুরু করি এবং অসময়ে তরমুজ চাষ করতে সক্ষম হই।’
সরেজমিনে দেখা যায় হরিপুর উপজেলার আমগাঁও ইউনিয়নের কামারপুকুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে শাহিন আলম ,আব্দুল জলিলের ছেলে মানিকুজ্জামান ও হরিপুর সদর ইউনিয়নের কারিগাঁও গ্রামের সংবাদকর্মী মামুন চৌধুরী পৃথকভাবে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে ব্লাকবেবি (উপরে কাল ভিতরে লাল) গোল্ডেন ক্রাউন (উপরে হলুদ ভিতরে লাল) দুই জাতের ২৬ শত তরমুজ গাছের চারা রোপন করেন৷ এক মাসের মধ্যেই ফলন আসে তরমুজের ৷ ৫০ দিন বয়স হয়ে এখন সাড়ে চার কেজির মত ৷প্রতিটি তরমুজ রয়েছে সুতার জালে মোড়ানো। বেশিরভাগ তরমুজ এখন বিক্রয় করার মত উপযোগী মনে করছেন তারা।
কেউ কিনতে আগ্রহী হলে (০১৭৮৮১৪৭১৩১ শাহিন আলম) কামারপুুকুর গার্লস স্কুলের পিছনে হরিপুর ঠাকুরগাঁও এই ঠিকানায় যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছেন নিজ ফেসবুক টাইমলাইনে ।
কৃষক না হয়েও প্রথমবারের মত মাচান পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন সময়ে বারোমাসি তরমুজ চাষ সফলভাবে করতে পেরে অনেক খুশি শিক্ষার্থী শাহিন। তিনি জানান, পরিবেশ বান্ধব কৌশল অবলম্বনে বিষমুক্ত বারোমাসি তরমুজ আবাদ করে সুদিন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন।
উপকারভোগী কৃষক (সংবাদকর্মী) মামুন চৌধুরী জানান, বিঘা প্রতি জমিতে তরমুজ চাষ করতে তাদের প্রায় ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ বাদে ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। উপজেলা কৃষি অফিসার তরমুজ চাষ করতে উৎসাহিত করেছে এবং সার্বক্ষণিক আমাদের সহযোগীতা করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নইমুল হুদা সরকার বলেন- গ্রীষ্মকালে দুই ধরনের তরমুজ আবাদ করা যায়। উৎপাদন সময় লাগে কম সে হিসেবে এটি খুবই লাভজনক। প্রতি হেক্টরে ২২-২৩ টন পর্যন্ত এটি উৎপাদন করা সম্ভব। দুই জাতের তরমুজ চাষ করে ব্যপক সাফল্য পেয়েছেন চাষীরা। আগামীতে কৃষকদের মধ্য এ জাতের তরমুজ আরো বেশি জনপ্রিয়তা পাবে।