নওগাঁয় নির্যাতনের স্বীকার শিশু সিহাবের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন পুলিশ সুপার

অন্তর আহম্মেদ,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি :

নওগাঁর মহাদেবপুরে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে হাত-পা বেঁধে শিহাব হোসেন নামে ১৪ বছর বয়সী এক শিশুকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

গত শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়ক সংলগ্ন বাগাচারা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনের সাইট অফিসে এ ঘটনা ঘটে।

শিহাব হোসেন একই উপজেলার বাগাচারা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। সে নওগাঁ সদর উপজেলার হাপানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। মারধরের ঘটনার পর চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে মহাদেবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। তার শরীরের বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে বলে জানান চিকিৎসকরা।

মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর আবাসিক চিকিৎসক ( আরএমও) ডা: মাহবুবুর রহমান বলেন, মারপিট করারর কারনে সিহাবের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারত্বকভাবে জখম হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি শিশুটিকে আমাদের সাধ্য অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা প্রদানের। তবে আরও উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।

বিষয়টি জানতে পেরে ( শনিবার) সকালে নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া সিহাবের বাবার সাথে কথা বলেন এবং শিহাবেরর সু-চিকিৎসার ও ওষুধের সব খরচ বহন করার দায়িত্ব নেন।

শিহাবের বাবা খোরশেদ আলম বলেন, শিহাবের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। আমি টমটম চালিয়ে সংসার যা আয় করি তা দিয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। সন্তানের চিকিৎসা বহন কিভাবে করবো চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। এমন সময় এসপি স্যার চিকিৎসার সব খরচ বহনের আশ্বাস দিয়েছেন। যা শুনে স্বস্তি পেলাম।

তিনি আরো বলেন, এমন পরিস্থিতিতে এসপি স্যার পাশে দাঁড়িয়ে সহায়তার হাত বাড়ানোর জন্য স্যারের প্রতি কৃতঙ্গতা প্রকাশ করছি।

পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, সাধ্য অনুযায়ী সিহাব ও তার পরিবারের পাশে থাকবো। সিহাবেরর বাবা খোরশেদ আলম অর্থের অভাবে সন্তানের সু-চিকিৎসা যাতে ব্যহত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখবো। পুলিশের একটি টিমকে পাঠানো হয়েছিল সিহাবের সার্বিক চিকিৎসা নিশ্চিত করাসহ সব ধরনের সহায়তার জন্য। শিশু শিহাব সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক এটাই প্রত্যাশা করছি।

এদিকে সিহাবকে মারধরের ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত বকুল হোসেন (৫৫) নামের নাইট গার্ডকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি ওই অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনের নাইট গার্ড ছিলেন। তার বাড়ি উপজেলার চৌমাশিয়া গ্রামে।

মহাবেদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) আবুল কালাম আজাদ, আটক বকুল হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন। আজ ( শনিবার) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।